বই মেলায় আসছে ঢালী আরিফের ‘দ্যা কিয়ামাহ: বিগ ব্যাং অর বিগ ক্র্যাঞ্
এবারের বইমেলায় আসছে তার প্রথম মৌলিক গবেষণা ধর্মী গ্রন্থ ‘দ্যা কিয়ামাহ: বিগ ব্যাং অর বিগ ক্র্যাঞ্চ?’ বইটি প্রকাশনা করেছে, শাহজী প্রকাশনী।
তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক বিজ্ঞানমনস্ক মালয়েশিয়া প্রবাসী তরুন এ লেখক বর্তমান পটভূমিতে তুলে এনেছেন মুসলীম মনীষীদের দর্শণ ও বিজ্ঞান চর্চার সোনালী অতীতকে। তিনি দেখিয়েছেন মুসলিমরাও যে জ্ঞান-বিজ্ঞানে পিছিয়ে থাকার নয়।
যেখানে বর্তমান সময়ের বিজ্ঞানীরা মহাবিশ্ব ধ্বংসের ব্যাপারে ছয় থেকে সাতটি প্রসেসের কথা বলছে। সেখানে এ গ্রন্থে প্রায় ৫টি বছর ধরে কোরআনিক তথ্য নিয়ে গবেষণা করে সম্ভাব্য একটি মাত্র প্রসেসের কথা বলছেন।
বইটিতে কি কি থাকছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “দিনে দিনে আমাদের জন্ম ও মৃত্যুর মহাসত্যের মাঝখানে ঘটে চলছে আর এক মহাসত্য তা হচ্ছে, আলটিমেট ফেট অর্থাৎ আমাদের শেষ পরিণতি। আজকের প্রধান প্রধান ধর্মগুলো ও অধিকাংশ বিজ্ঞানীরা বলছে, আমাদের এ শেষ পরিণতি হবে ধ্বংস। আবার এ কথাগুলো আমরা যারা মুসলিম তারা মনে-প্রাণে বিশ্বাস করি যে, কেয়ামতের সময় হলে তা সংঘটিত হবে। কিন্তু আমরা জানিনা যে, কোন প্রসেস বা প্রক্রিয়ায় হতে পারে।
কেউ বলছে, বিগ ব্যাংয়ে। আবার কেউ বলছে, বিগ ফ্রীজ বা হিট ডেথ অথবা বিগ রিপ বা বিগ বাউন্সে। এবং আরও শুনছি কসমিক আনসার্টিনিটি অর্থাৎ ‘মহাজাগতিক অনিশ্চয়তা’র কথা। ফলে, আমরা যারা মডারেট এবং ধর্ম ও বিজ্ঞান অনুসন্ধিৎসু তারা পড়ে যাচ্ছি গোলক ধাঁধায়। সেই গোলক ধাঁধা কাটাতে আপনাকে স্বাগতম এ বইটিতে।
এ বইটির প্রথমে পাবেন আমাদের বিশ্ব তথা মহাবিশ্বের সৃষ্টি ও পরিচিতি এবং আমাদের ডেসটিনির ইসলামিক পিকচার। দ্বিতীয়-তৃতীয় অধ্যায়ে রয়েছে মহাবিশ্বের সৃষ্টি এবং ধ্বংসের বিষয়ে ধর্মশাস্ত্র ও বিজ্ঞানশাস্ত্রের এক অপূর্ব সমন্বয়। এছাড়া চতুর্থ অধ্যায়ে বিগ ব্যাং এবং বিগ ক্র্যাঞ্চের জটিল গাণিতিক ও জ্যামিতিক মডেলগুলোর সহজ সরল ব্যাখ্যা সহ গড পার্টিকেলের অনিশ্চিত ভবিষৎ এবং দশ হাজার বিজ্ঞানীর হারের অখন্ডনীয় তথ্য। পঞ্চম অধ্যায়ে রয়েছে, বিগ ব্যাং এন্ড বিগ ক্র্যাঞ্চের মধ্যে গ্র্যাভিটেশনাল ফাইট ও নিউটনের গতির সূত্রানুযায়ি বিগ ক্রাঞ্চের গানিতিক ব্যাখ্যা এবং বিগ ক্র্যাঞ্চের সাথে ঘড়ির কাঁটার সম্পর্ক কি, তার উত্তর।
এছাড়া বই জুড়ে রয়েছে, স্টিফেন হকিংয়ের বিগ ব্যাং কি সত্যি একটি ভ্রান্ত বিজ্ঞান? না কি অন্য কিছু। তাছাড়া মি: হকিংয়ের পরাজয় স্বীকারের একটি অজানা অধ্যায় ও স্যার আইজ্যাক নিউটনের পৃথিবীর শেষ দিনের ভবিষৎবাণীর মত পিলে চমকানো তথ্যের সমাহার সহ সর্বোপরি এ বইটিতে পাবেন ধর্ম ও বিজ্ঞানের সাদৃশ্যতার অসাধারণ যুক্তি- যা আপনার মরিচা ধরা চিন্তার এক মহাউত্তর।”
ঢালী আরিফ সাতক্ষীরা জেলার কালীগঞ্জ থানার হজরত খানবাহাদুর আহসান উল্লাহ (র.) এর পূর্ণ্যভূমি নলতা ইউনিয়নের সেহারা গ্রামে মোঃ আবুল হোসেন ও মর্জিনা খাতুনের সন্তান।
তিনি ২০০২ সালে এস.এস.সি, ২০০৪ সালে এইচ.এস.সি এবং ২০১০ সালে কৃতিত্বের সাথে স্নাতক পাশ করেন।
২০০৯ সালে ব্র্যাক ’সামাজিক উন্নয়ন কর্মসূচীতে’ কর্ম জীবন শুরু করলেও ২ বছর পর নিজ উদ্যোগে “হেল্প” নামক শিক্ষা ও সামাজিক উন্নয়নের লক্ষ্য নিয়ে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার চেষ্টা করেন কিন্তু সেখানে তিনি ব্যর্থ হন।
২০১১-২০১৫ সালে সাতক্ষীরা জেলার সর্বপ্রথম এবং একমাত্র কমিউনিটি রেডিও “রেডিও নলতা’য় হেড অব টেকনিক্যাল হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। ৪ বছর সফলতার সাথে কাজ করে ২০১৫ সালের ১১ মে ‘মিডিয়া’ বিষয়ে পড়াশোনার জন্য মালয়েশিয়াতে পাড়ি জমান। বর্তমানে তিনি ‘ক্রিয়েটিভ মিডিয়া’ নিয়ে সেখানে পড়াশুনা চালিয়ে যাচ্ছেন।
লেখক তার কর্মগুণে ২০১৪-২০১৫ সালে ‘সার্ক কালচারাল সোসাইটি’ পুরস্কার ও ‘অগ্নিবীণা সাহিত্য সংসদ’ পুরস্কারে ভূষিত হন। ২০১৭ সালে, ল্যাবে স্বর্ণ তৈরি, এন্টি-নিউক্লিয়ার ও টিভি দেখার মাধ্যমে দর্শকদের কর্মসংস্থান বিষয়ে কাজের জন্য এনটিভি ভিউয়ার্স ফোরাম (ভিএফএম) মালয়েশিয়া তাকে এনটিভি ভিএফএম আওয়ার্ড প্রদান করেন।
২০১৯ সালে মালয়েশিয়াস্থ বাংলাদেশ প্রেস ক্লাব অব মালয়েশিয়া’র তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক হিসেবে বিশেষ আবদান রাখায় তৎকালীন বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মুহ. শহিদুল ইসলাম’র হাত থেকে সম্মানণা গ্রহণ করেন। ২০২০ সালে মিডিয়া উন্নয়নে অবদান রাখায় প্রধানমন্ত্রীর সাবেক তথ্য উপদেষ্টা ও ডিবিসি নিউজ চ্যানেলের চেয়ারম্যান ইকবাল সোবহান চৌধুরীর হাত থেকে সম্মাননা গ্রহণ করেন। এবং চলতি বছরের প্রথম দিকে তিনি বিজ্ঞান বিষয়ক উদ্যোগ ‘সার্চ ওয়ার’ এর উদ্যোক্তা হিসেবে ‘রেড লাইভ জ্যাশ এশিয়ান অ্যাওয়ার্ড’ ২০২১ প্রাপ্ত হয়েছেন।
প্রবাস জীবনে তিনি আইনস্টাইন, স্টিফেন হকিং, জাবীর ইবনে হাইয়ান সহ মুসলিম মনীষীদের জীবনী, বিগ-ব্যাং, ব্ল্যাক হোল, হোয়াইট হোল, ম্যাটার ও এন্টি-ম্যাটার নিয়ে কুরআন ও হাদিসের সাথে সাদৃশ্য ও বৈসাদৃশ্যকে সামনে রেখে তার প্রধান লক্ষ্য-উদ্দেশ্যের পাশাপাশি পড়াশুনা চালিয়ে যাচ্ছেন।
তিনি জানিয়েছেন, এই বইয়ের অর্থ দিয়ে সে একটি অত্যাধুনিক গবেষণাগার তৈরী করবেন। যেখান থেকে বাহির হয়ে আসতে পারে ভবিষ্যতের জাবির ইবনে হাইয়ান, টেসলা, নিউটন ও আইনস্টাইনরা।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।